Posts

Showing posts from July, 2025

ডিপস্টেট

খুব সম্ভবত ডিপস্টেট এর বাংলা করা অসম্ভব। অন্তত আমি বহু ভেবেও পারি নাই। ছায়ারাষ্ট্র্য, সমান্তরাল রাষ্ট্র্য এ যাবতীয় কোন কিছুই ডিপস্টেট এর মর্মার্থকে ধারণ করতে পারে না। সুতরাং ডিপস্টেট-ই সই। কথা হলো ডিপস্টেট কোন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নয়। বরং এটি একটি মানস। কিছু ধ্যান-ধারণা বা বিশ্বাসের সমষ্টি। এবং তার থেকে উদ্ভুত একটি চিন্তা কাঠামো। তবে শুধু চিন্তা কাঠামোর উপস্থিতি ডিপস্টেট তৈরী করে না। বরং শাসন ক্ষমতায় তার সক্রিয় চর্চা-ই ডিপস্টেট এর উপস্থিতি জানান দেয়। বাংলাদেশে ডিপস্টেট বলতে বোঝায় সেই মানস যা উপনিবেশবাদী শোষণ ব্যবস্থাকে জারী রাখতে চায়। যা বাংলাদেশে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষায় তৎপর। যা ইসলামকে শুধুমাত্র ব্যক্তিজীবনে সীমাবদ্ধ করে রাখার পক্ষপাতি। এসব প্রত্যক্ষ এবং প্রচ্ছন্ন উভয় ভাবেই ঘটে থাকে। প্রত্যক্ষ ভাবে ঘটার অনুঘটকেরা ভারতের বিশেষ এজেন্ট হলেও, এটা দেশীয় লোকদের মধ্যে যারা পুরোপুরি এই মানসকে আতস্থ করেছে তাদের দ্বারাও ঘটে। তবে এর চাইতে বিপদজনক হলো এর প্রচ্ছন্ন ভাবে ঘটার বিষয়টা। কারন যাদের মাধ্যমে এটা প্রচ্ছন্ন ভাবে ঘটে তারা এই মানসে বিশ্বাসী না হলেও এর নিকট পরাধীন। এই পরাধীনতা অনেক সম...

রাজনীতিবিদ ও দুর্নীতিবাজ-দের পেছনের গল্প

সেনা সমর্থিত এক-এগারোর সরকারের একটা বেশিষ্ট্য ছিলো প্রধানত রাজনীতিবিদদেরই দুর্নীতিবাজ গন্য করে প্রচার-প্রপাগান্ডা চালানো। তবে এদের পক্ষে বৈধতা উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছিলো জোট সরকারের আমল থেকেই। তখন থেকেই মূলত পঁচন আলো ও দিল্লী স্টার বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের প্রকল্প হাতে নেয়। এখানে মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের দুরদৃষ্টিতা লক্ষ্যণীয়। ওনার শেষ সাক্ষাৎকারে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামিস্ট অক্ষশক্তির মেলবন্ধনে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তিসমূহের মধ্যে অবশ্যম্ভাবী পরিণতির আতংক থেকে উৎসারিত তীব্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি উঠে এসেছিলো। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামিস্ট শক্তিসমূহের সমণ্বিত সয়লাব প্রতিহত করবার উপায় ছিলো তিনটা: এক. এই মৈত্রীর মধ্যে ভাঙ্গণ সৃষ্টি দুই. মুক্তিযুদ্ধের সূত্রে আওমীলীগের হাত ধরে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে প্রতিষ্ঠিত করা তিন. বিরাজনীতিকরণ এ কারনেই এক-এগারোর সরকারের প্রথম দিকে শহুরে লোক কিংবা বামবাদী তাত্ত্বিকদের ভাষায় শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ব্যাপক জনসমর্থন ছিলো। এই তত্ত্বের অসারতার কথা আগেও বলেছি। আবারও বলি। এই তত্ত্বের অপনোদন এর ব্যাখ্যাতেই নিহিত। এই তত্ত্ব অনুযায়ী শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কোন ধরণের এজেন্সি...

নারীর ক্ষমতায়ন ও ইসলাম

Image
সম্প্রতি পাশ্চাত্যিয় কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর নারী নেত্রীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছেন। এ বিষয়-টা আমি সহজভাবে নিতে পারছি না। যদিও বাংলাদেশে প্রচলিত নারী-বিদ্বেষের হিন্দুয়ানী অপসংস্কৃতি চর্চার অপনোদনে নারীদের ক্ষমতায়নের ব্যাপারে আমি লিখেছি। এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। সংক্ষেপে কথা এই যে, মুসলিম নারীদের ক্ষমতায়ন কিংবা মুসলিম সমাজে নারীদের পশ্চাদপদতা অথবা নারী বিদ্বেষ জণিত সমস্যা সমূহের সমাধান হতে হবে স্বত:স্ফূর্ত। আরোপিত নয়। যখন তা স্বত:স্ফূর্ত হবে তখন তা হবে ইসলাম দ্বারা অনুপ্রাণিত। ইসলামী কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইসলামী তাহজীব-তমদ্দুনের আত্মশুদ্ধির আভ্যন্তরীণ শক্তি থেকে উৎসারিত। কিন্তু যখনই তা আরোপিত হবে তখন তা বিকৃতি, বিভেদ, বিভ্রান্তি-ই বয়ে আনবে কেবল। বিশেষ করে যখন কোরআন আমােদের সতর্ক করছে যে কাফের-মুশরিকগণ কখনোই ক্ষান্ত হবে না যাবৎ তারা মুসলমানদের তাদেরই মতো পথচ্যুত করতে সমর্থ হয়। সেই প্রেক্ষিতে, আমরা স্মরণ করছি যখন কিছুদিন আগে পাশ্চাত্যীয় কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকের ব্রিফিং এর ব্যাপারে জানাতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো যে নারীদের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গ...

ক্ষমতা ও সম্পদ

ক্ষমতার সাথে সম্পদের একটা সম্পর্ক আছে। ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের যেমন সম্পদ বৃদ্ধি পায়, তদ্রুপ সম্পদাশালী ব্যক্তিদের একটা ক্ষমতা তৈরী হয়। এটা ঐতিহাসিক সত্য। ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া মৌলিক ভাবে সমস্যা জনক নয়। সমস্যা জনক যখন তা অন্যায্য ভাবে বৃদ্ধি পায়। কিংবা বৃদ্ধি পাওয়া সম্পদের অন্যায্য ব্যবহার হয়। ক্ষমতার চর্চা একটি বিশেষ কর্ম। এর জন্য বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়। তা আহরণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। ক্ষমতা লব্ধ করবার বিষয়টি-ও সরলরৈখিক নয়। এ কারনে ক্ষমতাসীন শাসকের উপার্জনের বিষয়টিও জটিল। ঠিক কতোটুকু সম্পদ আহরণ তার জন্য নৈতিক এই বিষয়টি এখন পর্যন্ত অমীমাংসিত। ইসলাম এর সমাধান করেছে শাসকদের ধর্মানুরাগী করবার মধ্য দিয়ে। এ কারনেই আব্দুল কাদির আস-সুফী ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত আসাবিয়্যাদের দ্বারা ক্ষমতা গ্রহণের প্রকল্প তুলে ধরেছেন। যা জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম ভাতৃসংঘ সহ মোটামুটি সকল ইসলামপন্থীদেরও প্রকল্প বটে। এই প্রকল্পে শাসক মূলত একজন কৃচ্ছসাধক। যে কারনে পার্থিব সম্পদ তাঁকে কলুষিত করতে পারেনা। কিন্তু এই ব্যাপারটি সরলভাবে দেখবার সুযোগ নেই। কেননা সম্পদের সাথে ক্ষমতার একটি সহযোগ আছে। যা আমর...

বৈধতা উৎপাদনের প্রক্রিয়া

মোটা দাগে দুই প্রক্রিয়ায় বৈধতা উৎপাদিত হয়। এক. বাহুর জোরে দুই. পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে। বাহুর জোরে উৎপাদিত বৈধতা কেবল বাহুর জোরে টিকিয়ে রাখা যায় না। বরং তাকে টিকিয়ে রাখতে হয় তার ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। বাহুর জোরে উৎপাদিত বৈধতা যেমন বহুবিধ প্রক্রিয়ায় ঘটে থাকে তেমনি তার ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার ধরনও হয় নানা প্রকারের। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বৈধতা তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ। তবে তা যে সব সময় গণতান্ত্রিক এমন নয়। প্রায়শ যা ঘটে তা হলো বাহুর জোর ও পারস্পরিক বোঝাপড়া এ উভয়ের সংমিশ্রণে বৈধতা উৎপাদিত হয়। বৈধতা উৎপদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় মানুষ কখনও শুধুমাত্র বাহুর জোরে বৈধতা উৎপাদন করতে গিয়ে ব্যাপক অনর্থ, অনাচার, ও ফাসাদ তৈরী করে। আবার বিপরীত পক্ষে মানুষ পারস্পরিক বোঝাপড়ার চক্রে পড়ে তার উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে বা হারিয়ে ফেলে। পূর্বে বলেছিলাম বৈধতার ধারণা প্রতিষ্ঠা করা দুষ্কর। কেননা এটা একটি চক্রাকার বিষয়। যে মানদন্ডের ভিত্তিতে কোন বিষয়-কে বৈধ কিংবা অবৈধ বলে ধারণা করা হচ্ছে সেই মানদন্ড প্রতিষ্ঠিত হলো কিভাবে? অর্থাৎ মানদন্ড-ই যে বৈধ তার প্রমাণ কি? কে কাকে বৈধতা ...

জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ এবং একটি নীরব বিপ্লব

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সাহেব গতকাল বললেন যে তিনি অভিজাত শ্রেনীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত হন নাই বরং আপামর সংগ্রামী মানুষের অধিকার আদায়ে একজন লড়াকু যোদ্ধা হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিন-মজুর শ্রেনীর মানুষদের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। যারা তা লক্ষ্য করেছেন, আমি মোটামুটি নিশ্চিত, তাদের প্রায় কেউই এর গভীরতা টের পান নাই।   আমার জানামতে জামায়াতের ইসলামীর বর্তমান আমির ডা. শফিক সাহেব একজন অভিজাত শ্রেনীর মানুষ। অর্থাৎ অর্থ-বিত্ত সহায় সম্পত্তির হিসেবে তিনি বিত্তবানদের কাতারে পড়েন। তথাপি তিনি খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এমনকি নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতেও তিনি প্রস্তুত সে-ই ঘোষণা উচ্চকিত করেছেন। বিপ্লবের সূচনা-টা এখানেই। আর এ কারনেই যখন গত বছর জুলাইয়ের দৈব-দুর্বিপাকে সাধিত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দেয়াল লিখন করা হয়েছিলো এই বলে যে, এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে একজন রিকশা অলার সন্তানও দেশের ফদাংমনতি হবার স্বপ্ন দেখতে পারবে, তখন আমরা সে-ই বিপ্লবের অন্তর্সারশূ্ণ্যতা অনুধাবন করেছি। আরে মিয়া! ধর্মহীন-হীনজাত থেকে অকস্মা...

বাঘে-হরিণে খানা

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে সে দেশের সফর শেষ করে জামায়াতে ইসলামীর দল দেশে ফিরে যে যৌথ বক্তব্য দিয়েছে তার আমীরের ভাষনের অংশটি পুরোটা দেখলাম। চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের অনুবাদ পাঠ করে শোনানো হলেও তা শ্রুতিগোচর হয়নি। জামায়াতে ইসলামীর উচিত উভয়ের বক্তব্যের শ্রুতলিপি প্রকাশ করা। মুহতারাম আমীরের বক্তব্যে প্রথম দিকে বিস্মিত হয়েছি। এরপর দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। এরপর আশাণ্বিত হয়েছি। একদম শেষে খুশির চোটে দাঁত বের করে ভেটকি দিয়ে ফেলেছি। বিস্মিত হয়েছি এ কারনে যে চীন ইতিমধ্যে ঢাবি-তে চীনা কর্ণার প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। মনে পড়ে গেলো কদিন আগেও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারের নামে, বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশীপের নামে ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছিলো। স্বাভাবিকভাবেই আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে আমরা কি কখনো ভারতে বা চীনে বাংলা কর্ণার খুলতে পেরেছি? পরে মূহুর্ত খানেক চিন্তা করে বেকুব বনে গেলাম। নিজের গালে নিজে চড় মেরে বললাম ওরে বানলা তুই কস কি? এই যে যৌথ বিবৃতির আয়োজন তাতেও আমীর মহোদয়ের বাংলা ভাষণ চীনা ভাষায় রুপান্তরিত করে রাষ্ট্রদূত-কে শোনানোর দুরুহ কাজটি করছেন দৃশ্যত একজন চীনা নাগরিক। তারমানে বানলাদের যেতে ...

পাকিস্তানপন্থা

ব্যাপারটা এমন নয় যে আমরা ধর্মদ্রোহী বামবাদী কিংবা ধর্ম ব্যবসায়ী আওমী পরিবারে জন্মে বিগত মাফিয়া শাসনে হঠাৎ দ্বীনে ফিরে এসে ছালাফিগিরি, জিহাদিগিরি, মাছনা-ছুলাছাগিরি কিংবা ইসলামী ব্যাংকিং এর বেকুবি সমালোচনার আড়ালে জামায়াতে ইসলামীর সূত্রে খোদ ইসলামপন্থি রাজনীতির-ই বিরোধীতা করার মাধ্যমে তাগুতি-কুফরি অক্ষশক্তির একজন ঘেঁটুপুত্র হিসেবে মুরগীদের নিকট বিরাট হাফিজাহুল্লাহ হিসেবে আবির্ভুত হয়েছি। ব্যাপার-টা এমনও নয় যে ফুলার রোডের উচ্চ ডিগ্রীধারী বেকুব কিংবা পলাশী পট্টির চোথা-মারানি হাই-আইকিউ কামলাদের পাল্লায় পড়ে উপনিবেশবাদের পরাজিত চিন্তা কাঠামোকে উচ্চশিক্ষার নামে গলাধ:করণ করে এছলাম, দেহতত্ত্ববাদ, লালন ফকির, ছোছালিজম, লিবাড়েলিজম - ইত্যাদি বিচিত্র সব "জম" এর ঘুঁটা দিয়ে তৈরী এক গেলাস গাঁঞ্জুটি সেবন করে আমাদের দায় ও দরদের মজমা জমাইতে হবে। কিংবা পাকিস্তান সরকারের বেতন ও সুবিধাভোগী আপিসার-হাবিলদার, আমলা-কামলা থেকে দৈবদুর্বিপাকে পড়ে রাতারাতি দেশ, বাহিনী ইত্যাকার নানা-পতি হয়ে ভক করে এক কিদ্ভুদকিমাকার রাজনীতি পয়দা করতে বাধ্য হয়েছি - ঘটনা তেমনও নয়। অথবা ইস্লাঁ-মি পরিবেশে বড়ো হয়ে মনের বক্রতায় কিংব...

লেজিটিমেসি: বৈধতার সূত্র

বছর খানেক পূর্বে আমরা উল্লেখ করেছিলাম দেশের মানুষের যতো সমস্যা তার মধ্যে দুটো মৌলিক সমস্যা হলো: আকলগত, চরিত্রগত। বানলাদের আকল কম। এ কারনে সে পড়েও বোঝে না। কদাচিৎ যদিওবা সত্য তার উপলব্ধ হয় তাকে ধারণ করবার মতো, তার ওপর অবিচল থাকবার মতো চারিত্রিক শক্তি তার নেই। জুলাই পরবর্তী আলোচনা সমূহে আকলগত সমস্যা-টা সবচেয়ে প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে বলে মনে করি। "বিপ্লবী"-দের সমর্থনে গঠিত সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার প্রশ্ন তোলা, "বিপ্লব"-উত্তর প্রক্রিয়াকে পূর্বের কাঠামোর সাথে সংগিতপূর্ণ করবার আইনগত ভিত্তি নিয়ে ভ্রান্তিতে পড়া, "বিপ্লব"-এর মাধ্যমে পরাজিত শক্তির শাস্তি বিধানের আইনগত ও নৈতিক ভিত্তি নিয়ে অসংলগ্নতা - এসবই বাঙ্গালীর দুরভিসন্ধিমুলক চরিত্র, বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যাত্ব ও মানসিক নৈরাজ্যের প্রমাণ। পাঠক, বৈধতার সূত্রের হিসাব-টি প্রতিষ্ঠিত করা সহজ কর্ম নয়। কারন এই আলোচনার মূলে রয়েছে "উৎসগত" বা "অস্তিত্বগত" প্রশ্ন সমূহ। যেগুলো চরিত্রগত ভাবেই চক্রাকারে আবর্তিত হয়। এর ঈঙ্গিত আমরা পূর্বে দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম বেড়ালের গলায় ঘন্টা পরানোর ধাঁধা উল্লেখের মধ্য দিয়ে। যেম...

ধর্মহীন রাজনীতির কপটতা

কিছু দিন পূর্বে যখন বিএনপির নেতৃস্থানীয় পর্যায় থেকে ধর্মহীন রাজনীতি চর্চার সূত্রে পাশ্চাত্য কেন্দ্রিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা চর্চার অংশ হিসেবে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন, ক্যারিকেচার আঁকার অপসংস্কৃতিকে উৎসাহিত করা হয়েছিলো তখন আমরা এর বিরোধীতা করেছিলাম। কারন এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোন দ্বিধা ছিলোনা যে এটা প্রথমত মানব স্বভাব বিরোধী দ্বিতীয়ত এটা একটা অসাধু প্রয়াস। অর্থাৎ প্রথমত, যে আদম সন্তান নিজের সমালোচনা এমনকি মামুলী, দৈনিক, ও স্বাভাবিক বিষয় সমূহে পর্যন্ত প্রত্যাখান (rejection) ও মতের অমিল-কে সহজ ভাবে নিতে পারে না সেখানে সে কি করে তাকে লক্ষ্য করে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ মেনে নেবে? দ্বিতীয়ত যারা রাজনীতি-তে এই ব্যঙ্গ বিদ্রুপের অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে চেয়েছেন তারা তা চেয়েছেন মূলত বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে চাওয়ার নিয়তে। এটা কপটতার চূড়ান্ত। এর সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ আমরা প্রত্যক্ষ করলাম বিএনপির অঙ্গসংগঠন সমূহের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে প্রস্তর নিক্ষেপে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ উত্তর ঘটনাবলীতে। মিডিয়াতে হত্যাযজ্ঞকে গৌন করে হত্যাযজ্ঞের বিরোধীতায় গড়ে ওঠা প্রতিবাদের ধরণ ও ভাষাকে আলোচনার মুখ্য বিষয়ে পরিণত করা হলো। মনে হয় হত্যাযজ্ঞ ...

প্রসঙ্গ: প্রস্তর নিক্ষেপ

এটা সত্য যে রাজনৈতিক ভাষণ প্রদানের উত্তেজনতায় ও প্রগলভতায় প্রতিটি শব্দ সুচিন্তিতভাবে উচ্চারিত হয় না। তথাপি ভাষণের মূলভাবে জীবন ও বাস্তবতার একটা গভীর বোঝাপড়ার প্রতিফলন হওয়া চাই। আওয়ামী জাহেলিয়াতের পর জাতিয়তাবাদী প্রস্তর যুগের আগমনের শংকায় ভীত হয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু নেতৃস্থানীয় পর্যায় থেকে এমন কোন বক্তব্য দেয়া উচিত নয় যাতে নেতার দুরদৃষ্টি ও জ্ঞানের গভীরতা প্রশ্নের সম্মুখিন হয়। যেমন পাথর মেরে হত্যার ঘটনায় অনিসলামী শিক্ষা ও শাসন ব্যবস্থার দায়ের বিষয়টি সামনে আসেনি। না আলোচিত হয়েছে বিচারিক অব্যবস্থার প্রসঙ্গ। কিন্তু এমন অনেক কথা হয়েছে যা ভ্রান্তিপূর্ণ। তার মধ্যে একটি হলো খোদ পাথর মেরে হত্যার বিষয়টি-কে নিন্দনীয় করে তোলা। মোটা দাগে এটা দুই কারনে সমস্যা জনক। একটা ধর্মীয়। আরেকটা প্রায়োগিক। ধর্মীয় কারন-টা সকলের জ্ঞাত। ইসলাম ধর্ম মতে বিবাহিত ব্যভিচারি ও ব্যভিচারিনী উভয়ের শাস্তি প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে এ শাস্তি ৮০ বার বেত্রাঘাত। ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের একটি হলো হজ্জব্রত পালন করা। যাতে শয়তানের প্রতি প্রস্তর নিক্ষেপে মুসলমানদের উৎসাহিত করা হয়।...

লুতুপুতু নাস্তিকতা

বাংলাদেশে নাস্তিকতা বা ধর্মদ্রোহীতার যে ক্ষীণ ধারা আমরা লক্ষ্য করি এর বয়স খুব বেশী নয় বলেই আমার ধারণা। তবে দেশী নাস্তিকতার এই ধারাকে আমি বলি লুতুপুতু নাস্তিকতা। একটা উদাহরণ দেই। গণপরিবহণে চড়ে নীলক্ষেত থেকে বাসায় ফিরছি। বাসের পেছনের আসনে উঠেছে বুয়েটের দুই কাবিল। নিজেদের মধ্যে কথোপোকথনে খুবই উগ্র, আতম্ভরী। এটা খুব সম্ভবত ২০০৪-৫ সালের দিকের ঘটনা। তাদের কথাবার্তায় খোদাদ্রোহীতা, ধর্মদ্রোহীতা স্পষ্ট। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যে পরিমাণ বিরানী খোর হুজুর এবং বিরানী খোর নাস্তিক তৈরী করেছে সে পরিমাণ প্রকৌশলী তৈরী করতে পেরেছে কিনা সেটা ভাবনার বিষয়। তো তাদের কথাবার্তায় কিছু বিষয় আমার দৃষ্টিগোচর হলো। এর মধ্যে একটা হলো এই BAL-এর আলাপ যে সব দর্মেই বালো-কারাপ আচে। একজন পোকিত নাস্তিক হিসেবে তারা সব দর্মের বালো জিনিসটা অনুসরণ করে। উরি বাবা! উরি বাবা, উরি বাবা রাসনা! পাঠক, লুতুপুতু নাস্তিকতার এর চেয়ে ভালো উদাহরণ বোধ হয় আর হতে পারে না। কারন এই যে কেবল "বালো"-টা অনুসরণ করার ধারণা এইটা একটা ধর্মীয় চিন্তা। সব সময় যে ভালো-টাই করতে হবে এই ধর্মীয় বিশ্বাস তার দাবীকৃত নাস্তিক মানসে প্রচ্ছন্ন ভাবে র...