লুতুপুতু নাস্তিকতা
বাংলাদেশে নাস্তিকতা বা ধর্মদ্রোহীতার যে ক্ষীণ ধারা আমরা লক্ষ্য করি এর বয়স খুব বেশী নয় বলেই আমার ধারণা। তবে দেশী নাস্তিকতার এই ধারাকে আমি বলি লুতুপুতু নাস্তিকতা।
একটা উদাহরণ দেই। গণপরিবহণে চড়ে নীলক্ষেত থেকে বাসায় ফিরছি। বাসের পেছনের আসনে উঠেছে বুয়েটের দুই কাবিল। নিজেদের মধ্যে কথোপোকথনে খুবই উগ্র, আতম্ভরী। এটা খুব সম্ভবত ২০০৪-৫ সালের দিকের ঘটনা। তাদের কথাবার্তায় খোদাদ্রোহীতা, ধর্মদ্রোহীতা স্পষ্ট। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যে পরিমাণ বিরানী খোর হুজুর এবং বিরানী খোর নাস্তিক তৈরী করেছে সে পরিমাণ প্রকৌশলী তৈরী করতে পেরেছে কিনা সেটা ভাবনার বিষয়।
তো তাদের কথাবার্তায় কিছু বিষয় আমার দৃষ্টিগোচর হলো। এর মধ্যে একটা হলো এই BAL-এর আলাপ যে সব দর্মেই বালো-কারাপ আচে। একজন পোকিত নাস্তিক হিসেবে তারা সব দর্মের বালো জিনিসটা অনুসরণ করে। উরি বাবা! উরি বাবা, উরি বাবা রাসনা!
পাঠক, লুতুপুতু নাস্তিকতার এর চেয়ে ভালো উদাহরণ বোধ হয় আর হতে পারে না। কারন এই যে কেবল "বালো"-টা অনুসরণ করার ধারণা এইটা একটা ধর্মীয় চিন্তা। সব সময় যে ভালো-টাই করতে হবে এই ধর্মীয় বিশ্বাস তার দাবীকৃত নাস্তিক মানসে প্রচ্ছন্ন ভাবে রয়ে গেছে। সেই লক্ষণ তার কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ এনরেজীতে বললে বানলা বুদ্ধিজীবিটার লুঙ্গি খুলে গেছে।
কেননা ধর্মীয় চিন্তা বাদ দিলে, সৃষ্টিকর্তা, পরকাল, হাশর-নশর এই সব ধ্যান-ধারণা বাদ দিলে, মানব জ্ঞানের গোড়ার দিকের ধারণা সমূহ খসে পড়ে। আর এ কারনেই পাশ্চাত্যের ধর্মহীন, মানবতাবাদীদের বুদ্ধিজীবিতার একেবারে গোড়ায় গলদ। শুরুতেই এই প্রশ্ন নিয়ে ক্যাচাল লেগে যায় যে ভালো-মন্দ বলতে আসলে কিছু আছে কিনা। আর তাকলেই সবাইকে বালো-টাই কততে হবে এটা কে বলেচে, এ্যাঁ? বরং নিৎসের উপদেশ অনুযায়ী আমরা নিরো হবো। ঢাকা জ্বলবে, আমরা বাঁশি বাজাবো।
কি? ভয় পেয়েছেন? ভয় পাওয়া-টাই স্বাভাবিক। কারণ কুফর ভয়ংকর জিনিস। আল্লাহর রাসুল সা: এঁর সাহাবীগণ আইয়ামে জাহেলিয়াত দেখেছিলেন। কুফর মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তাঁদের হয়েছিলো। হয়েছিলো বলেই তাঁরা তাঁদের ঈমান রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। দুনিয়ার কোন কিছুর বিনিময়ে তাঁরা তাঁদের ঈমান হারাতে রাজী ছিলেন না।