Posts

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বোঝাপড়ার সূত্রে কিছু বিভ্রান্তির অপনোদন

Image
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা অনেকে উপলব্ধি করেন না তাহলো ইরান যদি কখনো ঈসরায়েলকে ধরাশয়ী করতে সক্ষম হয়ও তথাপি সিরিয়া ও গাজা যুদ্ধের নৈতিক দায়ভার সে এড়াতে পারবে না। আমি যতোটুকু জানতে পেরেছি সিরিয়ান বিদ্রোহীরা প্রায় তিন লক্ষাধিক নিহতের তালিকা তৈরীর পর নিহতের তালিকা হাল নাগাদ করা ছেড়ে দেয়। তবে নিহতের সংখ্যা "নূন্যতম" ছয় লক্ষ বলে ধারনা করা হয়। এই বিশাল হত্যাযজ্ঞের আগুনে ইরান ঘি ঢেলেছে। বরং যখন সে নিজে যুক্ত হয়েও বাশার সরকারকে টিকাতে পারছিলো না তখন সে রাশিয়ান কাফের দেশটিকেও এই হত্যাযজ্ঞ, এই ধ্বংসযজ্ঞে শামিল হতে উদ্বুদ্ধ করে। এর পক্ষে এতোকাল সে বলে এসেছিলো যে ওহাবী আল-কায়েদা, আইসিস সহ আন্তর্জাতিক "জিহাদী", "সন্ত্রাসী"-দের বিরুদ্ধেই তার এই যুদ্ধ। অর্থাৎ এই যে অগুণিত মানুষ নিহত হলেন, তার চাইতে কয়েকগুন সিরিয়ান দেশান্তরি হলেন তারা সবাই "সন্ত্রাসী" প্রভৃতি। ইরান বলেছিলো যে এই "সন্ত্রাসী"-রা সিরিয়ায় ক্ষমতার মসনদে বসলে সর্বপ্রথম ইরানে হামলা করবে। অর্থাৎ এদের উত্থান ইরানের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরুপ। আমার সুস্পষ্ট মনে আছে সিরিয়ায় অভিবাসনকৃত আমেরিক...

কি? হিংসে হয়?

২০১১-১২ সালের দিকে ফেসবুকে প্রায়শ একটা ডায়ালগ দেখতাম, 'কি? হিংসে হয়'? তখন ভেবেছিলাম এটা সোশাল মিডিয়ায় চাউর হওয়া একটা সাময়িক ডায়ালগ। কিন্তু এর মনস্তাত্তিক গভীরতা বুঝতে আমার পাক্কা পাঁচ থেকে সাত বছর লেগেছে। কারন বাংলাদের মতো এরকম জটিল ও কুটিল মনস্তত্তের অধিকারী আমি নই। যেদিন এই ডায়ালগের মর্মার্থ উপলব্ধি করলাম, আতঙ্কিত হলাম। একটা বাংলা ভালো আছে। সুখে আছে। কিন্তু সে জানে তার এই ভালো থাকা, সুখে থাকার কথা বাংলাস্থানের জংলীগুলো জানতে পারলে তাদের গাত্র দাহ হবে। হোগা জ্বলবে। তাকে খোঁটা দিবে। টিকা টিপ্পনী কাটবে। চোগলখুরী করে তার মনটা বিষিয়ে দিবে। এখন এটা উপলব্ধি করার পর একজন সাধারন মানুষ কি করবে? সে তার সুখের খবর, ভালো থাকার খরব চেপে যাবে। আড়াল করবে। উপরন্তু তার মতো অন্যেরাও যেনো ভালো থাকতে পারে, সুখী জীবন যাপন করতে পারে সে জন্য সচেষ্ট হবে। তাদের জন্য দোয়া করবে। নিজের সাধ্য অনুযায়ী তাদের উপকার করার চেষ্টা করবে। কিন্তু এরা তো জয় বাংলা! হাজার বছরের নিম্ন বর্ণের হিন্দু়। শূদ্রের পয়দা থেকে তারা এই সেদিন সুযোগ বুঝে ম্লেচ্ছো সেজেছে। ক্রিস্টোফার ল্যাশ এর ভাষায় "আপওয়ার্ড মোবিলিটি" আরকি...

গোয়েবলস সূত্রে

ইরানের এক্টিভিস্টদের কায়দা কানুন "দৈনিক ইনকিলাব" পত্রিকার মতো। অর্থাৎ এরা হলো ইসলামী গোয়েবলস। যদি কিছু ঘটে সেটাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করে। যদি কিছু না-ও ঘটে তাহলে পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী কল্পনার আশ্রয় নিয়ে নিজ থেকে বানিয়ে বানিয়ে খবর প্রচার করে "তৌহিদী জনতার" আবেগ কিংবা বেকুবিকে পুঁজি করে নিজেদের পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর জন্য। এ কারনে এদের ঠিক কোন খবরটা সত্য, কোনটা অতিরঞ্জিত, কোনটা একেবারে বানোয়াট এটা বুঝতে বেশ বেগ পেতে হয়। বিশেষ করে যারা সাধারন পাঠক তাদের জন্য। কারন সব খবর যাচাই বাছাই করাতো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের সে সময়ও নেই, রিসোর্সও নেই। তাই একসময় দেখা যায় খবরের ব্যাপারে পাঠকের বিশ্বাস উঠে যায়। ঠিক এই বিষয় টা আমরা লক্ষ্য করেছি খোদ যুক্তরাষ্ট্র্যে। ট্রাম্পের যে উত্থান এটা যতোটা না তার প্রতি মানুষের আস্থা থেকে তার চাইতে বেশী ডিপ স্টেট এবং প্রচলিত মিডিয়াগুলোর ওপর অনাস্থা থেকে। ৭ অক্টোবরের পর ইরানের সব চাইতে বড়ো যে ক্ষতিটা হয়েছে তা হলো সে তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। রাজনৈতিক কিংবা সমরতান্ত্রিক বাগাড়ম্বর ময়দানে লড়াইয়ের একটা মোক্ষম অস্ত্র। কিন্তু যু...

ভাতৃসংঘ থেকে আল-শারা: কিভাবে?

বিপ্লবোত্তর সিরিয়ার রাজনৈতিক ময়দানে মুসলিম ভাতৃসংঘের মতো পুরনো, ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের প্রচ্ছন্ন উপস্থিতির বিষয়টা অনেক দিন ধরেই ভাবাচ্ছিলো। ভাতৃসংঘ বর্তমান ক্রান্তিকালীন বিপ্লবী সরকারেরও অংশ এবং একথা চালু আছে যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা সিরিয়ার ভাতৃসংঘের বৃহত্তর অংশের সমর্থন আদায়ে ব্যাপক ভাবে সচেষ্ট। প্রশ্ন হলো ভাতৃসংঘের মতো এতো বড়ো দল কি করে ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়লো। অবশ্য এই প্রশ্নের যথার্থতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলতে পারেন যারা আহমাদ আল-শারাকে ভাতৃসংঘের বৃহত্তর প্রভাব বলয়ের ফসল হিসেবেই গণ্য করতে চান। কিন্তু এই সব প্রায়োগিক খুঁটিনাটি এড়িয়ে গিয়ে মোটা দাগে এই প্রশ্ন তো করাই যায় যে আহমাদ আল-শারার নেতৃত্বে এই বিজয় ভাতৃসংঘের দাওয়াত ও তরবিয়্যাতের রাজনৈতিক প্রকল্প থেকে বেরিয়ে গিয়ে সশস্ত্র সংগ্রাম-কে প্রাধান্য দেয়ার মরহুম আইমান আল-জাওয়াহিরির প্রস্তাবনাকেই প্রতিষ্ঠিত করে। এর বিপরীতে এই পাল্টা যুুক্তিও দেয়া যায় যে আহমাদ আল-শারার সফলতার বীজ বাপিত হয়েছিলো যেদিন তিনি আল-কায়েদার সাথে সমস্ত রকমের সাংগঠনিক সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে সংগ্রামের পথ কখনো এক রৈখিক নয়। বরং...

বাংলাদেশের মূল সংকট

একটা খুব আশ্চর্য বিষয় লক্ষ্য করলাম। এক হেফাজতী মুফতি বলেছেন যে প্রাণ-আরএফএল কোম্পানীর মালিক বা সিইও কাদিয়ানী হওয়ায় তাদের পন্য বর্জন করা উচিত। এখন এই কথার সত্যতা তো আমার পক্ষে যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে যেটা আমাকে বিস্মিত করেছে তাহলো ঐ মুফতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কমেন্ট বক্সে তীব্র প্রতিক্রিয়া। এরকম প্রতিক্রিয়া আমরা দেখেছিলাম এক ছাত্রনেতা কর্তৃক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের পর। প্রতিক্রিয়ার এইরুপ তীব্রতার সাদৃশ্যে এই দুই পক্ষের মধ্যে একটা যোগসূত্র অনুমান করা যায়। যা এদেশে সামরিক-পূঁজিতন্ত্র ঘনীভূত হবার আশংকাকে প্রকট করে।   তার কিছু লক্ষণ আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি। যেমন খোদ রাজধানীতে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মতো সহিংস অপরাধমূলক কাজের হার বেড়ে যাওয়া। কেননা সব অপরাধতো আর সহিংস নয়। এরুপ অপরাধ জিয়ার ছদ্মবেশী সমরতন্ত্র ও এরশাদের প্রকাশ্য ও সুদীর্ঘ সমরতন্ত্রের পর প্রকট আকার ধারন করেছিলো। আমার শৈশবের আবছা স্মৃতি মনে আছে। যখন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন উত্তর সংকটকালে জামায়াতে ইসলামীর নি:স্বার্থ সমর্থনে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণ করে। তার পরপরই ঢাকার কোন এক বস্তিতে প্রকাশ্যে এরুপ সহিংস ঘটনা...

The Case for Rohingyas

Ever since the Gaza war I've been asking myself why didn't I raise my voice the same way for the other oppressed Muslims specially for the Rohingyas since ethnically they are Bengalis and live right next to us. While its not an excuse there are convincing reasons worthy of discussion.   First, I'm not an activist per se. I write re-actively most of the time than proactively. This is because my main interest has been in the sciences and engineering as in Computer Science and Engineering, although Gaza war has made some significant changes in me. But at the same time I've always been politically aware. Its hard for me to look away from the injustices happening right before my eyes. So this is a dialectic that I've been pondering upon for a while. You see some of the great minds excelled despite their challenging life. But at the same time, one could argue, that many were lost in the tribulations of life, specially if it is a moral choice at hand. After all how many of...

জুলাই কাহা-নি

জুলাইয়ের পটপরিবর্তনের পর অর্ধ-বৎসর পার হতে চললো। বহু ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে ঈমান এবং কুফর এর লড়াই, এই ব-দ্বীপের ইসলাম প্রিয় জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব ও স্বাধীকার আদায়ের লড়াই প্রকট হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে যা প্রকাশ পেয়েছে মজলুম জননেতা এটিএম আজহারের মুক্তির আন্দোলনে। এর ফলাফলের ওপর জুলাইয়ের পট-পরিবর্তনের যথার্থতা নির্ধারিত হবে। ছায়ারাষ্ট্র্যের স্বার্থান্ধ, খোদাদ্রোহী, বিভ্রান্ত, ও কপট কারিগরদের ক্ষমতার গভীরতাও বোধ করি এর মধ্য দিয়ে প্রকাশ পাবে। যদিও এটিম আজহারের মুক্তি এবং বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের জনগণ বিশেষ করে মুসলিমদের কল্যাণকামী একমাত্র পরীক্ষিত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়া নিকট ভবিষ্যতের জটিল সংগ্রামের একটা দিক মাত্র। কেননা এই সংগ্রামে ময়দানের লড়াইয়ের সাথে চিন্তার লড়াইয়ের মেল বন্ধন করানোটা অতীব জরুরী। বাঙ্গালীর দুর্বল আকলজ্ঞান এই মেল বন্ধনের পথে প্রধান বাধা হলেও এর ক্ষেত্র তৈরী করেছে আন্দোলনের সুবিশাল জনগোষ্ঠী যারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি একনিষ্ঠ হলেও সেই লক্ষ্য অর্জনে দলীয় কর্ম ও চিন্তা পদ্ধতিকে পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেনি। এই বিষয়টা মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব উপলব্ধি করেছ...