বিভাজন যখন শক্তি
বাংলাদেশের মানুষ বিভাজন চায় না। ঐক্য চায়। বর্তমানে এই ঐক্যের দুটি প্রধান চালিকা শক্তি হলো: এক) আওয়ামী, ভারতপন্থী কিংবা মুজিববাদী ফ্যাসিজমের বিরোধীতার সূত্রে ঐক্য দুই) ইসলাম পন্থীদের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্য। মজার ব্যাপার হলো এদেশের মানুষেরা নিজেরা কিন্তু পারিবারিক কিংবা সামাজিক ক্ষেত্রে একতাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের কোর্ট-কাচারি গুলোতে পারিবারিক ও সামাজিক মামলা মোকদ্দমার বহর এই বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তোলে। তথাপি বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া হলো দেশে একটা রাজনৈতিক ঐক্য হোক। রাজনৈতিক দলের নেতারা বাংলা সিনেমার শেষ দৃশ্যায়নের মতো সবাই মিলে একত্র হয়ে দাঁত কেলিয়ে এট্টু ফটুসেশন করুক।
দেশে পারস্পরিক হানাহানি দুর হয়ে সম্প্রীতির সুবাতাস বইতে থাকুক - এমন কামনা মানবিক তবে বাস্তবিক নয়।
আমি বরং বিষয়টাকে অন্যভাবে দেখি। ঐক্য কিংবা বিভাজন মূল কথা নয়। কথা হলো কিসের ভিত্তিতে ঐক্য বা বিভাজন হচ্ছে এবং তার প্রকৃতি-ই বা কি? অর্থাৎ যদি ধর্মদ্রোহীতার ভিত্তিতে ঐক্য হয়, যদি ছাগলামীর ভিত্তিতে ঐক্য হয় - সেই ঐক্যের আমি ঘোর বিরোধী। এর বিপরীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নিয়তে যদি বিভাজন এমনকি সংঘর্ষ-ও হয় আমার তাতেও তেমন আপত্তি নাই। বরং আমি তাকে ইসলামের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ হিসেবেই দেখবো।
একথা নিশ্চিত যে বর্তমানে যদিও ইসলামপন্থী ও মুসলিম জাতীয়তাবাদি ইত্যাদি নানা ধরনের অসার বিভাজনের বাস্তবতার মধ্যে আমাদের বসবাস, তথাপি এই বাস্তবতা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। মুনাফিকদের হিসাব আলাদা তবে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, ও প্রসারের সাথে সাথে বিশ্বের সকল মুসলমানই পর্যায়ক্রমে ইসলামপন্থী হয়ে উঠবেন। তখন এই উদ্ভট বিভাজনের আর প্রয়োজন হবে না।
অর্থাৎ পতন যুগে মুসলমানদের ইসলাম বিমুখতার সাথে পাল্লা দিয়ে মুসলমানেরা যতো বেশী ক্ষমতাহীন হতে থাকলো ততোই তারা তাদের পতনের জন্য উদভ্রান্তের মতো ইসলামকেই দায়ী করা শুরু করলো। কিন্তু এহেন কঠিন পরিস্থিতিতেও মহান আল্লাহ যাঁদের ঈমানের ওপর অটল রেখেছিলেন তারা স্পষ্টত জানতো যে ইসলাম নয় বরং ঈমানের দূর্বলতাই মুসলমানদের এই পরিণতির একমাত্র কারন। এভাবে যখন তাঁরা মহান আল্লাহ প্রদত্ত কঠিন পরীক্ষা সমূহ উৎরে গিয়ে নিজেদের ঈমানের দৃঢ়তা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন তখন মহান আল্লাহ তাঁদের হাতেই ক্ষমতা প্রত্যার্পণ করবেন। সে দৃশ্যায়নে মূর্খ ও দূর্বল ঈমানের মুসলমানদের ভুল ভাঙবে এবং তারা পুনরায় ইসলামের উদ্দেশ্যে জীবন পণে ব্রত হবেন।
তবে এই স্তরে এসেও কিন্তু বিভাজন মিলিয়ে যাবে না। বরং মুসলমানের বিভাজন তার আদি ও অকৃত্তিম রুপে ফিরে যাবে। অর্থাৎ পতন যুগে ইসলামপন্থী ও মুসলিম জাতিয়তাবদী প্রমুখ উদ্ভট বিভাজন ছিলো খোদ ইসলামের যৌক্তিকতার প্রশ্নে। এটা ছিলো ঈমানের দূর্বলতা জণিত ধরনের বিভাজন। কিন্তু উত্থান যুগেও মুসলমান বিভাজনের উর্ধে ছিলো না। তবে সেই বিভাজন ছিলো ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথ ও পন্থাজণিত। সেই বিভাজনের ধরন ছিলো ঈমানের উৎকর্ষতা যাচাই সংক্রান্ত।
এ কারনেই আমরা দেখতে পাই যে জানদারলি হালিল পাশার সাথে কিশোর রাজপুত্র ও পরবর্তীতে সুলতান মেহমেদের যে বিরোধ তা কিন্তু এই প্রশ্নে নয় যে আমরা ইসলাম বাদ দিয়ে রোমীয় কুফরী গ্রহণ করবো কিনা? বরং তা ছিলো হালিল পাশার এই আশংকা যে কিশোরমতি সুলতানের কস্তুনতুনিয়া বিজয়ের "উন্মাদনায়" পড়ে পুরো উসমানীয় সাম্রাজ্যটাই লয় প্রাপ্ত হয় কিনা! এবং তাঁর এই আশংকা আঁতলামী কিংবা মিডিয়া পট্টিতে চোপামারানির সূত্রে নয়। বরং তা ছিলো বাস্তব অভিজ্ঞতা লব্ধ। তিনি যেমন সুলতান মুরাদ খানের ব্যর্থ কস্তুনতুনিয়া বিজয়াভিযানের প্রথম সারির সৈনিক ছিলেন তেমনি বংশগত ইসলামপন্থার সিলসিলায় ইতোপূর্বেকার চারশত বৎসরেরও অধিক সময় ধরে চলা কস্তুনতুনিয়া অভিমুখে পরিচালিত সব ব্যর্থ অভিযানের ইতিহাস সম্পর্কেও তিনি ছিলেন পূর্ণরুপে ওয়াকিবহাল। সুতরাং মেহমেদের সাথে তাঁর বিরোধও ইসলাম পালনের স্বার্থেই। মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টাতেই।
তদ্রুপ নব্বুই দশকের শেষার্ধে যখন তুরস্কের ইসলামপন্থীদের বিভাজন তৈরী হলো তাও ছিলো কামাল পাশা প্রতিষ্ঠিতি ইসলাম বিদ্বেষী তুরস্কে ইসলামকে বিজয়ী করার মোক্ষম পথ ও পন্থা নির্ধারণের সূত্রেই। অর্থাৎ এরবাকানের ধর্মীয় বিশুদ্ধতাপন্থার বিপরীতে গিয়ে যখন এরদোগান নির্বাচনে জয় লাভের নিমিত্তে তুরস্কের বেশ্যাপাড়া গুলোতেও নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালাচ্ছিলেন১, ফটোসেশন করছিলেন, যখন তুরস্কের ফ্যাশন মডেলের তরুণীদের নিজ দলে ভিড়িয়ে তাদের দিয়ে একদিকে নারীদের মধ্যে নিজ দলের সমর্থনের প্রসার ঘটাচ্ছিলেন অন্যদিকে পাশ্চাত্যের শক্তি সমূহের নিকট তাঁর দলকে নারীর প্রতি সংবেদনশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছিলেন, কামালপাশার ইসলাম বিদ্বেষী ও সেকুলার পন্থী সমরতন্ত্রের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়িয়ে গিয়ে তাদের গৃহিত ও পছন্দের রুশ বিরোধী-পাশ্চাত্যমুখি বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেছিলেন - তার মূল উদ্দেশ্যও ইসলাম প্রতিষ্ঠা বৈ অন্য কিছু ছিলো না।
কেননা বর্তমানে দেশের মিডিয়াপট্টি গুলোতে যে বদ উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামপন্থীদের ঘুরে ফিরে গৎবাঁধা কিছু প্রশ্ন করা হয়, সেই একই বদ উদ্দেশ্যে আশি ও নব্বুইয়ের দশকে এরদোগান ও তাঁর ইসলামপন্থী সহকর্মী যিনি ১৫ বছর বয়স থেকেই হিজাব পরিধান করতেন
মানে বামাতি চেতনায় মগজ ধোলাই হওয়া সকলের প্রশ্ন একই:
আফনেরা কমতায় আশলে ম্যারা কি গর তেকে বেরুতে পারবে? আফনেরা ম্যাদের জুর করে বুরকা পরাবেন? ম্যারা কি ছাগরি কত্তে পারবে?
এভাবে জেরার এক পর্যায়ে যখন এরদোগান জিজ্ঞাসিত হলেন যে তিনি নির্বাচিত হলে মদের দোকান ও বেশ্যাগার গুলো বন্ধ করে দেবেন কিনা তার জবাবে তিনি পাল্টা শুধোলেন যে আপনি আমাকে শহরের জানজট, আবর্জনার স্তুপ, বায়ু দূষণ, পানির সংকট এই সব বিষয়ে প্রশ্ন করছেন না কেন?
কেনো করছেন না তাতো আমরা জানি। কারন কাজের বিষয়ে কথা উঠলে তো বামাতি, ধর্মহীন দুষ্টচক্রের মুখোশ খসে কুৎসিত শয়তানি চেহারাটা বেরিয়ে পড়বে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার মতো তুরষ্কেও তখন এই মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে মানুষ এতোটাই ক্ষিপ্ত ছিলো যে, যেকোন মূল্যে এইসব সংকট থেকে জনমানুষের মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নেয়াটা তাদের জন্য ছিলো অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন। কেননা এই অ-ইসলামপন্থী গোষ্ঠী, তা বামাতি হোক, জাতিয়তাবাদী হোক, সেকুলারবাদী হোক, আর যাই হোক, এদের দুর্নীতি ও অযোগ্যতায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিলো। এমনকি এইসব বামাতিদের ক্ষমতায়নের পর শ্রমিক অসন্তোষ ও অসহযোগের প্রেক্ষিতে ইস্তাম্বুলের মতো শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যত অচল হয়ে গিয়ে এক পর্যায়ে জমাট বাঁধা মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণে ২৭ জন দরিদ্র লোক প্রাণ হারায়।
সুতরাং তেমন প্রেক্ষাপটে এরদোগানের মতো একজন ধীশক্তিমান স্বভাবজাত রাজনীতিকের জন্য মতাদর্শিক গোঁয়ার্তুমির বিপরীতে বাস্তবভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করাটাই ছিলো অধিকতর গ্রহণযোগ্য। তার ফলে তুরস্কের জীবনমানের উন্নতি-ই শুধু নয় বরং কামালপাশার ইসলাম বিরোধী স্টিমরোলারে পড়ে ধর্ম হারানো তুর্কি জাতি কিভাবে আবারও ইসলামে প্রত্যাবর্তন করছে, উজ্জীবিত হচ্ছে তা পুরো বিশ্ববাসী ঈর্ষার সাথে প্রত্যক্ষ করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জন্য আমার খারাপ-ই লাগে। একটি উৎকর্ষ ও বাস্তবভিত্তিক রাজনৈতিক তত্ত্বের উত্তরাধিকারী হওয়া স্বত্তেও বাঙ্গালী জাতিয়তার সূত্রে সে যেমন হোঁচট খেয়ে চলেছে, অর্থাৎ তার বাঙ্গালী জাতগত সীমাবদ্ধতা যেমন তার জন্য পিছুটান তৈরী করেছে, তেমনি তার ওপর যোগ হয়েছে তাকে মোকাবেলার অনুপযুক্ত তার অযোগ্য বিরোধীপক্ষ।
এ কারনে একদিকে আমরা দেখেছি হাসিনার মাফিয়া সরকারের চাপে পড়ে তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব দলছুট হয়েছে। অর্থাৎ বিভাজন তৈরী হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিভাজনের উৎস ও ধরন ছিলো অত্যন্ত নিম্ন প্রকৃতির। অর্থাৎ এই বিভাজন হয়েছিলো খোদ ইসলামপন্থার যথার্থতার প্রশ্নে। এবং তা ছিলো বাংলা প্রকৃতির। এর মানে হলো জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশে যে ধরনের রাজনীতির চর্চা করা হলো চরম রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সংকটে পড়ে তার থেকে একই সাথে হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রী মুখ ফেরানো হলো কিন্তু তার স্বপক্ষে যুৎসই কোন কারন দাঁড় করানো গেলো না। অর্থাৎ মইজা হঠাৎ পোরধানমনতি হইছে। এখন খুশির ঠেলায় সে বলতাসে রবি ঠাকুর দেখে যান আমার বাংলারা মানুষ হইছে। তার ঠিক দুই দিন পরই শাসন ক্ষমতার ভারে যখন মইজার লুঙ্গি খুলে গেলো তখন সে চিৎকার করে বললো, বিধাতা সবাইকে দেন সোনার খনি। কিন্তু আমারে দ্যাছেন চুরের খনি। হেঁ হেঁ হেঁ... আল্লাহর মাইর, দুনিয়ার বাইর ... বালো হয়েছে না?
অপরদিকে আমরা দেখছি যে ইসলামপন্থীদের মধ্যে যারা জামাতের সমর্থক নন তাদের বিরোধিতা-বিভাজনের উৎস যদিও ইসলামের সূত্রে নয়, অর্থাৎ তাঁরাও ইসলামের বিজয়-ই চান বটে, তথাপি তাঁদের বিভাজনের ধরন কাঙ্খিত মানের নয়। অর্থাৎ অন্তত এরবাকান কিংবা মুরসী যতোটুকু বিজ্ঞতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন তার ধারের কাছেও তারা নাই।
বিভাজনের এই আলাপের সূত্রে এটাও উল্লেখ্য যে আরবে যে তরুণ নেতৃত্বের উত্থান ঘটেছে রাজ বংশীয় সূত্রে তাদের বর্তমান রাজ্য ও বৈদেশিক নীতিও তাদের পূর্ব-পুরুষদের গৃহীত নীতি বিচ্যুত। এই বিভাজনের উৎস ও ধরন-ও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। ফিলিস্তিন কেন্দ্রিক তাদের পূর্বপুরুষ ও তাঁদেরও পূর্বের ইসলামপন্থীদের গৃহীত অকার্যকর নীতি ও কর্মযজ্ঞের পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতার সূত্রে নতুন প্রজন্মের গৃহীত যেকোন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সচেতন ব্যক্তিবর্গের চিন্তার খোরাক হতে পারে যাবৎ তা ইসলাম থেকে বিচ্যূত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ বর্তমান এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের জন্য যদি "মডার্ন ইসলামের" নাম দিয়ে সমাজে সেকুলারিজমের প্রসার ঘটিয়ে ইসলামকেই বিতাড়িত করা হয় তখন তা নিশ্চিতভাবেই পরিত্যাজ্য হয়ে পড়ে।
এক্ষেত্রে বোঝাপড়া-টা হলো এই যে তারা যদি এই বিভাজনের লড়াইয়ে হামাসের বিরুদ্ধেও প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে নেমে পড়ে তথাপি তা "পর্যবেক্ষণযোগ্য" যাবৎ তারা এই বিভাজনে ইসলামকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়২। কিন্তু বাস্তবতা হলো তার উল্টো। তারা চাচ্ছেন আরবের মতো রক্ষণশীল দেশে মায়ামির মতো নেংটা বীচ তৈরী করতে। এটা একদিকে যেমন ধর্মীয় ভাবে অসংগত অপরদিকে অবাস্তবও বটে! শীতের দেশ থাকতে, থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মতো স্বস্তা দেশ থাকতে নেংটা বীচে মাগীবাজির জন্য আরবের খরতাপে দগ্ধিভূত হতে যাবে কোন পাগলে?
সুতরাং দেখা যাচ্ছে। বিভাজন থাকবেই। গুটি কয়েক মোনাফেক বাদে মুসলিম উম্মতের সকলেও যখন প্রকৃত অর্থে মুসলমান অর্থাৎ ইসলামপন্থী হয়ে উঠবে তখনও বিভাজন থাকবে। এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হলো বিভাজনের ধরনে। সেই বিভাজনে কোন পক্ষ জিতবে তা ঠাহর করা মুশকিল বটে। কারন ইসলাম এবং কেবল মাত্র ইসলাম আদম সন্তানকে যাপিত জীবনের সর্বোচ্চ অভিজ্ঞতার (highest form of living experience) স্তরে উন্নীত করে। এটা সম্ভব কেবলমাত্র ঈমানের সূত্রে। কেবল ঈমানের সূত্রেই, কেবল খোদা প্রেমের সূত্রেই পয়দা হতে পারে ফাতিহ মেহমেদের মতো মজনূন, প্রেমোন্মত্তের। তার বিপরীতে জানদারলি হালিল পাশা পক্ষিয়রা বারংবারই ভুল বলে প্রমানিত হন।
১ এই নিয়ে স্বৈরাচারের দোসর ধর্ম ব্যবসায়ী এক শ্রেনীর লোক কম অপরাজনীতি করবার চেষ্টা করেনি। স্বৈরাচারী সিসির দোসর মিশরের প্রাক্তন সরকারী মুফতি আলী গোমা এরদোগানের রাজনীতির এই অধ্যায়-কে কেন্দ্র করে তাকে একহাত নিয়েছেন। এরদোগানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছেন:
অথচ, চাইলে আলী গোমার নিজ দেশ মিশর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-আযহারের প্রতিও একই অভিযোগ আরোপ করা যায়।
কেননা মিশরে গত শতকের শুরুর দিক পর্যন্তও খোদ আল-আযহারের সন্নিকটে বেশ্যাখানা প্রতিষ্ঠিত ছিলো।
এই বিষয়ে আমি অনেক দিন ধরে লিখবো বলে ভাবছিলাম। তবে সংক্ষেপে এতোটুকু বলা প্রয়োজন যে শয়তানের কর্মপদ্ধতি হলো এই যে সে প্রথমে আপনাকে খোদাদ্রোহীতায় উদ্বুদ্ধ করবে। এরপর আপনি যখন খোদাদ্রোহীতায় লিপ্ত হবেন তখন সে-ই সর্বপ্রথম আপনাকে তিরষ্কার এবং ভর্ৎসনা করবে। এই উপমহাদেশেও বেশ্যাখানার প্রচলন হয়েছিলো বিলাতীদের হাত ধরে। এরপর দেখেন VICE না এ জাতীয় একটা পাশ্চাত্যীয় চ্যানেল ২০১৩-১৪ এর দিকে খেয়াল করলাম বিরাট ডুকমেন্টারী পয়দা দিয়া বসলো যে উপমহাদেশের সবচেয়ে বিরাট বেশ্যাখানা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে। হিসাব-টা বুঝছেন তো?
তথাকথিত আকাবীর কিংবা ওলামায়ে সূ দের প্রধান সমস্যা হলো এরা বাস্তব ভিত্তিক চিন্তা করতে পারে না। ফলত: এরা বরাবরই জালিমশাহী-কুফরি-তাগুতী শক্তির ক্রিড়ানকে পরিণত হয়। আলী গোমার মতো মুফতি এবং জগৎ বিখ্যাত আলিম এঁর এটা বোঝা উচিত ছিলো যে তুরস্কের বেশ্যাগার সমূহ এরদোগান প্রতিষ্ঠা করেন নাই। আবার এসব হঠাৎ বন্ধ করে দেবার ক্ষমতাও তাঁর ছিলো না। তাই তাঁকে বাধ্য হয়েই বাস্তবতা মেনেই কাজ করতে হয়েছে। আর এটা মানহাজী গং দের জগৎ বিচ্ছিন্ন, কূপমন্ডুক কর্মপদ্ধতির চেয়ে ঢের চ্যালেঞ্জিং।
২যদিও এর শরয়ী বিধান সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই।
৩ইসলামপন্থীদের মাঝের দ্বন্দ্ব সমূহের একটা ভালো উপস্থাপন হয়েছে ইসলামী ইতিহাসকে উপজিব্য করে নির্মিত তুর্কি সিনিমা গুলোতে। এরতুগ্রুল ও গুন্দগদু এর দ্বন্দ্ব কিংবা ওসমান বে এবং গুন্দুজ বের দ্বন্দ্বে এই বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে।