বকধার্মিকের ধর্মচর্চা
বাংলাদেশের এক কুখ্যাত কমুনিস্ট বলেছে যে সে ঈমান এবং আমলের সহিত মরতে চায়। এই নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের বিশ্লেষণ করবেন, এমনকি ঠাট্টা-তামাশাও করতে পারেন। তবে শুধু শিরোনাম দেখেই আমার মনে তাৎক্ষনিক যে বোধদয় হলো তা এই যে, দেশের ধর্মহীন-ইসলাম বিরুদ্ধ অংশটি যে সবচেয়ে বড়ো ধর্ম ব্যবসায়ী এটা আবারও প্রমান হলো।
আরও এই যে ইসলামের বিকৃত চর্চার যে ব্যাপকতা তাও বোঝা গেলো। সারা জীবন নিরীহ মুসলমানদের অধিকার হরণ করে, অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জন করে, ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন না করে শেষ জীবনে এসে "তোবা তোবা" করা, অবৈধ অর্থে হজ্ব সম্পন্ন করা, জবর দখলকৃত জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা, সেই মসজিদের কমিটি গঠন করে তার সভাপোঁদ-ছেরমেন-পোরসিডেন্ট ইত্যাদি বনে যাওয়া, ইমাম-মুয়াজ্জিন-খাদিমদের অন্যায় ভাবে প্রভাবিত করা, তাদের ওপর অনধিকার চর্চা করা, সাধারণ মুসল্লীদের দানকৃত টাকার ওপর বা যৌথ সম্পত্তির ওপর নিজের একক কর্তৃত্ব ফলানো - এতোসব করেও অনেকেই নিজেকে বেকসুর মনে করেন; এমনকি ইসলামের বিরাট খাদিম, বিরাট মুসলমান, মুজাহিদ, ধর্মবেত্তা ইত্যাদিও বনে যান।
যারা এরুপ বিকৃত ইসলামে বিশ্বাসী তারা জেনে রাখুক মহান আল্লাহ পবিত্র। এবং তিনি কেবলমাত্র পবিত্র জিনিস গ্রহণ করেন। আর মুসলমানদের মধ্যে যারা আমার মতো এই সমস্ত ধর্মব্যবসায়ি-বকধার্মিকের ধর্মচর্চায় ঘাবড়ে গিয়ে, হয়রান হয়ে এর পেছনের হেকমত তালাশে ভ্রুকুঞ্চিত তাঁদের উদ্দেশ্যে আমার একটা উপলব্ধির কথা বলতে পারি।
হাদীস শরীফে এমন এক রজলুন আদিল বা মোটাসোটা মানুষের কথা বলা হয়েছে যে সে বেটার আমল নামার বহর দেখে, ফিরিস্তি দেখে স্বয়ং ফেরেস্তারাও ঘাবড়ে যাবেন। তথাপি দেখা যাবে তার এই এতো এতো নামাজ লোক দেখানো ছিলো, তার লোকখ্যাত দান-খয়রাতি অবৈধ অর্থে ছিলো; বেরিয়ে আসবে সে কি করে বহু মুমিনের অধিকার হরণ করেছে। এভাবে তার আমলনামা থেকে সকলের প্রাপ্য দেনা মিটিয়ে দিতে দিতে এক পর্যায়ে সে ফতুর হয়ে পড়বে। কিন্তু তখনও তার দেনাদার রয়ে গেছে বেশুমার। তখন তার দেনাদারদের গুনাহের খাতা থেকে তার ওপর গুনাহের ভার চাপিয়ে দেয়া হবে।
সুতরাং কোন বকধার্মিক বা ধর্ম ব্যবসায়ির ধর্ম চর্চায় নিরুৎসাহিত বা বিভ্রান্ত হবেন না। মনে রাখবেন যে অন্যায় করে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রথম শাস্তি এই ছিলো যে সে অন্যায়টা করতে পারলো। বিপরীত পক্ষে যাঁরা ইসলামের পক্ষে আছেন, ন্যায়ের পথে-হকের পথে তাঁদের এই জারী থাকাই তাঁদের প্রতি আল্লাহর প্রথম রহমত।
