ভেড়া ও তার মেষপালক

বেলুন যতো বড়ই হোক তার ভেতরটা ফাঁপা। এ কারনে বিশালদেহী বেলুনের বায়বীয় অস্তিত্ব প্রমাণে ক্ষুদ্র কাঁটার আলতো স্পর্শ-ই যথেষ্ট। জালিম ও জুলুমের ওপর প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা, বাচনে যতো তাকত-ই দেখাক তা শূন্যগর্ভ। সরকারপক্ষের যারা এতোদিন মার্কিনিদের বিরুদ্ধে অনেক হাঁকডাক দিচ্ছিলো, এক ভিসা নীতির বদৌলতে তাদের মুখ পাংশু হয়ে গেছে। অপরদিকে স্বৈরাচারীর আসু পতনের সম্ভাবনায় দেশে ঈদের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

একথা যেমন সত্য যে দেশের আপামর জনসাধারণের ন্যায় আমি যেমন পুলকিত, তেমনি একটা মুসলিম প্রধান জনগোষ্ঠীর অক্ষমতায় শঙ্কিতও বটে। বিগত এক যুগে এতো এতো ঈমানদারদের জান গেলো, অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করলো, অনেকে গুম হলো, অনেকে ভিটা-মাটি ছাড়া হলো, অনেকে চাকুরীচ্যুত হলো, তথাপি এইসব অবিচারের সুরাহা হওয়া দুরে থাক, জালিমের টিকি-টা স্পর্শ করা গেলো না। সেই জালিমের এতো হম্বিতম্বি, এতো অহমিকা, এতো উল্লম্ফন, নিমেষে টলে গেলো এক কাফের দেশের ভিসা "নীতি"-তে!

আমরা কি তাহলে আঁ হযরতের ভবিষ্যতবাণীর সেই বিশ্বাসীগণ, যারা সংখ্যায় বেশুমার কিন্তু কুওতে গাঁজলার চেয়েও হালকা? ভবিতব্য অনুসারে আমাদের দেশটাকেও কি অচিরেই কাফেরেরা দস্তরখানের খাদ্যের মতো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে?

আমাদের অবস্থা হলো এক ভেড়ার পালের ন্যায় যার জন্য প্রয়োজন ছিলো তুর্কী কাংগালের মতো স্থৈর্যশীল, তীক্ষ্ণ দৃষ্টির সজাগ মেষ পালকের। কিন্তু তার অভাবে আমরা একবার শিয়ালের নিকট ধর্ণা দিই, তো পরের বার হায়েনার নিকট। আমাদের কবে এই উপলব্ধি হবে যে, কেবলমাত্র একটা বিশ্বস্ত ও প্রশিক্ষিত কুক্কুর-ই পারে একটা ভেড়ার পালকে পাহারা দিয়ে রাখতে? যদি প্রশিক্ষিত কুক্কুর নাও থাকে তাহলেও শিয়াল কিংবা হায়েনা দিয়ে গৃহপালিত পশু পাহারা দেয়া যায়না। সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত না হোক, অন্তত বিশ্বস্ত কুক্কুর বাছাই করে নেয়া চাই। যদি কুক্কুরে, শিয়ালে, হায়েনায়, ভেদজ্ঞান না থাকে তবে জাতির ভাগ্যাকাশের কালিমা লেপন দুরাশা মাত্র!

Popular posts from this blog

জুলাই কাহা-নি

অত্রাঞ্চলে আমি-ই রাষ্ট্র্য, আমি-ই তার পতি

The Case for Rohingyas