লিঙ্গ ভিত্তিক মতবাদের ফিৎনা
কিছুদিন আগে বাঙ্গালীর হাল-ফ্যাশনে তাড়িত হয়ে বাঁদরের মতো অনুকরণ করার উদাহরণ দিতে গিয়ে ছৈদি-ছালাফী-ছুফি প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছিলাম। কিন্তু এর সর্বগ্রাসী প্রবণতা ও ভয়াবহ কুফল সম্পর্কে পাঠক-কে আদৌ কতোটুকু সচেতন করতে পেরেছি তা নিয়ে আমি সন্দিহান।
সর্বগ্রাসী কারন এই প্রবণতা শুধু ধর্মীয় পরিমন্ডলে সীমিত নয়। এই বাঁদারামি বাঙ্গালীর পুরো জীবন ও কর্ম জুড়ে। আমরা পূর্বে যেমনটা বলেছিলাম: বাঙ্গালী আচ্ছন্নপ্রবণ। এক সময় সে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিলো। এখন সে বিজ্ঞানাচ্ছন্ন। এটা আচ্ছন্ন প্রবণতা কারণ এর অনুসরণে ভেদজ্ঞানের কোন বালাই নাই।
কিন্তু এই যে বাঙ্গালী বিজ্ঞানাচ্ছন্ন তা একারনে যে সে পাশ্চাত্য সভ্যতার (কিংবা অসভ্যতার) গুণমুগ্ধ। পাশ্চাত্যের দেশ সমূহের দুনিয়াবী জাঁকজমকের পেছনে বিজ্ঞানের অবদানকেই বাঙ্গালী মুখ্য চালিকাশক্তি বলে মনে করে। পাশ্চাত্যের প্রতি বাঙ্গালীর এই মুগ্ধতা শুধু বিজ্ঞানের প্রতি তার অনুরক্তিতে থেকে থাকেনি। বরং বাঙ্গালীর মনমগজে পাশ্চাত্যের দর্শন, জীবনপ্রণালী, ও রাজনীতি জ্বীনের মতো আছর করে বসেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর ন্যায় বাংলাদেশে লিঙ্গ ভিত্তিক ফিৎনার প্রসার এই আচ্ছন্ন প্রবণতার সাম্প্রতিক উদারহণ। যেহেতু পাশ্চাত্যের দেশগুলো করছে তাই এর অনুসরণেই কোন কল্যাণ নিহিত আছে এমন বিশ্বাস জাতির অবচেতনে। অপারেশনের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তনের খবর তা-ই আবার মনে করিয়ে দিলো:
সমস্যা হচ্ছে পাশ্চাত্যের লিঙ্গ সম্পর্কিত বিভ্রান্তির উৎসে রয়েছে তাদের ধর্মীয় কিংবা অধর্মীয়-সেকুলার শিক্ষা ও দর্শন। মুসলমানদের এ নিয়ে সমস্যা হবার কথা নয়। ইসলামী ফিকাহ শাস্ত্রে লিঙ্গ সম্পর্কিত বিস্তর আলাপ আছে শুধু তাই নয় বরং এটা মীমাংসিত ও পুরাকালের আলাপ। সেই তুলনায় পাশ্চাত্য ও অন্যান্য অমুসলিম সভ্যতাগুলো যে এই সকল মীমাংসিত বিষয় সমূহে নিত্যনৈমিত্তিক ভাবে পিছল খাচ্ছে তা তাদের সভ্যতার নাবালকত্বের নির্দেশক।
আমার জানা মতে ইসলামী আইন শাস্ত্রে "তৃতীয় লিঙ্গ" বলতে কিছু নাই। অর্থাৎ নারী ও পুরুষ ব্যতিত অন্য কোন লিঙ্গের উপস্থিতি ইসলাম স্বীকার করে না। এটা বিধর্মীরাও করেনা। কিন্তু পার্থক্য এখানে যে ইসলামী আইন শাস্ত্র্য বাস্তবতা অস্বীকার করে না। অর্থাৎ মানবের শারীরিক বিকাশ সম্পর্কিত বা ত্রুটি জনিত যে শারীরিক বিকৃতি ইসলাম তার স্বীকৃতি-ই শুধু দেয়নি, এ নিয়ে আলোচনা আছে বিস্তর, সূক্ষ ও গভীর। বিপরীত পক্ষে অমুসলিমদের সেকুলার রাষ্ট্র্যগুলো-ও এতোদিন এ সমস্যাগুলোর উপস্থিতি সম্পূর্ণ অস্বীকার করার মধ্যেই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করে আসছিলো।
ইসলামী ফিকাহ শাস্ত্রের মসলাহা, উপদেশ বা বিধি হচ্ছে এই যে নারী বা পুরুষ কারও মধ্যে এই জাতীয় কোন শারীরিক বিকৃতি দেখা দিলে প্রথমত স্বাধীনভাবে তার পূর্ণাঙ্গ বিকাশে বাধা প্রদান না করা। অর্থাৎ এক লিঙ্গের মধ্যে বিপরীত লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য প্রবল হলে ততোক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করা যতোক্ষণ পর্যন্ত শরীরতত্ত্বের নিয়মানুযায়ী শরীরের বৃদ্ধি না থেমে যাচ্ছে। এরপর যদি দেখা যায় যে চিকিৎসার এমন কোন পদ্ধতি আছে যাতে নগণ্য হস্তক্ষেপের মাধ্যমে (minor intervention) কোন লিঙ্গীক বৈশিষ্ট্যের বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা দুর করা যায় তখন ক্ষেত্রবিশেষে তা জায়েয। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিধান হলো যার মধ্যে যে লিঙ্গের প্রাধান্য বেশী থাকবে সে সেই লিঙ্গের বলে বিবেচিত হবে এবং সে সেই লিঙ্গ সম্পর্কিত ইসলামী বিধান মেনে চলবে। যেমন কোন নারীর ভগাঙ্কুর (clitoris) যদি পুরুষাঙ্গের মতো বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় সেক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হলো তার মাসিক-ঋতুস্রাব কিংবা বীর্যপাত-স্বপ্নদোষ এর মধ্যে কোনটা প্রবল বা নিয়মিত। যেটা প্রবল বা নিয়মিত সে সেই লিঙ্গের বলে বিবেচিত হবে বা সেই লিঙ্গের ধর্মীয় বিধান মেনে চলবে।
কিন্তু কথা হলো আমি না একজন ফকীহ না এই সম্পর্কিত জ্ঞান ফলানো আমার উদ্দেশ্য। আমার মাকসাদ শুধু এতোটুকু যে ইসলাম ধর্মীয় শাস্ত্রের ব্যাপকতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, মুসলমানদের হীণমন্যতা দূর করা এবং এই সম্পর্কিত ফিৎনা থেকে আদম সন্তানদের সচেতন করা। কারন লিঙ্গ সম্পর্কিত এই সব প্রচার-প্রপাগান্ডা একটি সুনির্দিষ্ট ভাবাদর্শ (Ideology) দ্বারা পরিচালিত। নিয়মিত পাঠক হয়তো স্মরণ করবেন আমি ইতিপূর্বে সুপন্ডিত উমার ফারুক আব্দুল্লাহ সাহেবের একটি কর্মশালার ভিডিও উল্লেখ করেছিলাম যেখানে লিঙ্গ সম্পর্কিত এই ভাবাদর্শের গুরু, এর বুৎপত্তি, ক্রমবিকাশ ইত্যাদি নিয়ে তিনি দিক নির্দেশনামূলক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছিলেন:
সেই আলোচনায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন এসব মতবাদের ধর্মহীন-ধর্মবিরুদ্ধ-সেকুলার প্রবক্তারা দাবী করেন যে মানুষের বিরুদ্ধে সৃষ্টিকর্তার বা তাদের ভাষায় প্রকৃতির সংঘটিত সর্বপ্রথম অপরাধ হচ্ছে মানবের সম্মতি ব্যতিরেকে তার লিঙ্গ নির্বাচন করে দেয়া! তবে এদের বিকৃত মানসিকতা এখানে থেমে থাকেনি। এরা মানবের চিরায়ত পারিবারিক সম্পর্কগুলোর মূলে পর্যন্ত আঘাত করেছে। অর্থাৎ যৌনাচারের ক্ষেত্রে সর্বকালে, সর্বত্র মানুষ পারিবারিক সম্পর্কগুলোর যে সীমা ও পবিত্রতা রক্ষা করেছে এইসব মতবাদের প্রবক্তাদের মতে সে সীমা থাকা অনুচিত। শয়তান বেশ ধরলেও যে তার কুৎসিত রুপ আপনাতে প্রকাশ হয়ে পড়ে তা বোঝা গেলো তো?
প্রসঙ্গক্রমে একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। প্রায়শ দেখি Moral Relativism প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টায় অনেকে বিভিন্ন আদিবাসীদের উদাহরণ টেনে আনেন। তাদের যে আচার বা অনুষ্ঠানকে ভিত্তি করে এই দাবী করা হচ্ছে সেই আচার বা অনুষ্ঠান যে তাদের আদি রীতির বিপরীত বা বিকৃতি নয় তা কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা হলো? মনে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র্যের এক পর্যটক তার Youtube channel এ "মানব খেকো" আদিবাসীদের সাথে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন। আমার যেটা লক্ষ্যণীয় মনে হয়েছিলো, তাহলো যাদেরকে মানবখেকো বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিলো, তাদের যখন জিজ্ঞেস করা হলো, তারা উত্তর দিলো মূলত এটা তাদের রীতি নয়। বরঞ্চ তাদেরই নিকটস্থ আরেক গোষ্ঠীর রীতি। তথাপি এটা তাদেরও নৈমিত্তিক খাদ্যাভ্যাস নয়। প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিশোধ মূলক রীতির অংশ হিসেবে তারা এটা করে থাকে। পাঠক এটা-কি হত্যার অপরাধের সার্বজনীনতার প্রকাশ নয়? এটা-কি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের সার্বজনীন সীমারেখার প্রমাণ নয়? এটা-কি মানবের ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবার প্রয়াশের সার্বজনীন চাহিদার উদাহরণ নয়?
যাহোক লিঙ্গ ভিত্তিক এই সমস্ত ফেৎনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মতো এমন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এধরনের অপারেশনের ঘটনা গুরুত্ববাহী বৈকি! এ বিষয়ে ধর্মীয় বিধানের অবতারণা ছাড়াই যেসব প্রশ্ন করা যায় তা হলো, শল্য চিকিৎসা সম্পর্কিত দেশীয় কোন বিধিমালা আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে যেটাকে বলে Age of Consent বা সম্মতি প্রদানের বয়স, বাংলাদেশে তা কতো? ১৭ বছরের একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক যার ভোটাধিকার পর্যন্ত স্বীকৃত নয়, কোন্ নীতিশাস্ত্র বলে তার জীবনের এমন গুরত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হলো এবং এটা আইনানুগ হলো কিনা? দেশীয় আইনে যদি এটা নীতিবিরোধী প্রমাণিত হয় তাহলে চিকিৎসকের পাশাপাশি সন্তানের পিতামাতা-ও এর জন্য দায়ভুক্ত হবেন কিনা?
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্র্যের মতো দেশে এখন এই সম্পর্কিত আইনে বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। কারন এটা এমন এক পথ যা থেকে ফিরবার কোন রাস্তা নেই (irreversible)। এই চিকিৎসা পরবর্তী জটিলতা ও আজীবন এর খরচ বহন করা সহ অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে রোগীকে প্রায়শই সচেতন করা হয় না। তাই ইদানীং প্রায়শ তাদের আক্ষেপ করতে দেখা যায় যারা প্রচার-প্রপাগান্ডার শিকার হয়ে এই চিকিৎসায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলো:
এমনকি এটা এক নতুন প্রবণতার (trend) জন্ম দিয়েছে যার নাম দেয়া হয়েছে De-transitioning:
আমার কাছে যেটা স্ববিরোধী মনে হয়েছে তা হলো একদিকে দাবী করা হচ্ছে চিকিৎসাপ্রার্থী পুরুষ থেকে "পুরোপুরি" নারীতে রুপান্তরিত হয়েছেন। কিন্তু পরোক্ষণেই আবার বলা হচ্ছে যে নারীতে রুপান্তরিত উক্ত ব্যক্তি গর্ভধারণে অক্ষম। যার জরায়ু নেই, যে জীণগতভাবে পুরুষ তাকে কিসের ভিত্তির নারীতে রুপান্তরিত হবার ঘোষণা দেয়া হলো? মূলত পুরুষের যৌণাঙ্গের বিকৃতি ঘটিয়ে একে বাহ্যিকভাবে নারীর যৌণাঙ্গে রুপান্তরিত করবার প্রক্রিয়াকেই বলা হচ্ছে নারীতে রুপান্তর। ইংরেজীতে এর নাম Gender Reassignment Surgery:
প্রশ্ন হলো ঐ "নারী" কি এখন কোন পুরুষের সাথে যৌন মিলনে সক্ষম? সেই সক্ষমতার সংজ্ঞা কি? একজন নারীর বহি:যৌনাঙ্গে (outer labia) প্রায় আট হাজার স্নায়ুতন্ত্র থাকে। হরমোন প্রয়োগের মধ্য দিয়ে কি এই "নারী"-র রুপান্তরিত যৌনাঙ্গে সেইসব স্নায়ুতন্ত্র "গজিয়ে" উঠবে?! বর্তমানে গবেষকদের মধ্যে একটা হাইপোথিসিস হলো পুরুষের যেটা অন্ডকোষ (scrotum/testes) সেটি-ই নারীদের বহি:যৌনাঙ্গে (labia majora) বিস্তৃত থাকে। এখন যেখানে ঐ "নারী"-র অন্ডকোষ-ই কেটে ফেলা হয়েছে, সেখানে তার পূর্ণাঙ্গতা পাবার দাবী করা হয় কিভাবে?
আমাকে যে বিষয়টি বেশ আলোড়িত করে তাহলো, একটা সময় এই শয়তানগুলোই ইসলামের খৎনা প্রথাকে mutilation বা অঙ্গচ্ছেদন বলে প্রচারণা চালাতো। খৎনা-র যে সুন্নত আফ্রিকা সহ কিছু দেশের নারীদের মধ্যেও প্রচলিত সেটাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে একটা হুলস্থুল তৈরী করা হয়েছিলো। আমার মনে আছে আমাদের ইংরেজীর শিক্ষক খুব সম্ভবত Readers Digest এ পড়া এক আফ্রিকান মুসলিম নারীর গল্প আমাদের শুনিয়েছিলেন যে কিনা FGM (Female Genital Mutilation) বা যৌনাঙ্গহানির স্বীকার। অথছ রাসুল সা: এর সুন্নত নির্দেশিত ছিলো একটি সুনির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর বা এলাকার নারীদের প্রতি যাদের মধ্যে এই সম্পর্কিত সমস্যা প্রকট ছিলো। রাসুল সা: নির্দেশিত নারীদের সেই খৎনা পাশ্চাত্যে এখন অহরহ হয় যাকে বলে labiaplasty।
এ কারনেই বিশেষত উপমহাদেশীয় হানাফীদের মধ্যে নারীদের খৎনার প্রচলন নেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ছৈদি-ছালাফিদের নব্য তালেবরেরা যারা মাযহাবের গুরুত্ব অস্বীকার করেন, সুবিশাল ফিকাহ শাস্ত্র্যকে কেবল "সুন্নাহ" দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে চান তারা কি এখন দেশীয় নারীদের খৎনার মিশনে নেমে পড়বেন? কেননা আলবানী রহ: সহ যাঁদের তারা গুরু মানেন বলে প্রচার করেন তাঁদের সকলেই এই সম্পর্কিত হাদীস সমূহের অকাট্যতা ও যথার্থতা স্বীকার করেছেন। কিন্তু এটা আলোচ্য বিষয়বস্তু নয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ধর্মীয় বিধানের বিরোধিতা করতে গিয়ে, ইসলাম ধর্মকে তুচ্ছ করতে গিয়ে যারা খৎনাকে অঙ্গচ্ছেদন বলে বিদ্রুপ করতো দিনশেষে তারাই আদম সন্তানকে নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অঙ্গচ্ছেদন করার ব্যাপারে উস্কে দিচ্ছে:
শয়তানি কুমন্ত্রণার ভিত্তি হলো 'ওয়াসওয়াস'। অর্থাৎ যা ফিরে ফিরে আসে। শয়তানের পক্ষে একবারে কখনই আদম সন্তানকে শয়তানের অনুসারীতে রুপান্তরিত করা সম্ভব নয়। উম্মতে মোহাম্মদী সা:-কে তো নয়ই। এটা হয় খুব ধীরে ধীরে। এক পদক্ষেপ দিয়ে শুরু। কিন্তু সেটা যখন হাজার পদক্ষেপে গিয়ে ঠেকে তখন ফিরে আসা কঠিন হয়ে যায়। সুতরাং এখনই সাবধান হোন। উচ্চকিত হোন। প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।