বান্দীর পুত বনাম নবাবের পুত
বান্দীর পুত ভোট পাক বা না-পাক, শাসক হওয়া তার ধাতে নাই; শোষন-ই তার পরিণতি।
দেশে-বিদেশে এর প্রমাণ আছে ঢের। যেমন, ভোট হিটলারও পেয়েছিলো, ইমরান খানও পেয়েছিলেন। বিপুল জনসমর্থন মুসোলিনীরও ছিলো, ইমরান খানেরও আছে। কিন্তু খান সাহেব তাঁর ক্ষণস্থায়ী শাসনকালে যে খেদমত, যে পরিবর্তন আনতে পেরেছিলেন, কোন অযোগ্য-ইতর বংশজাতের পক্ষে আজীবনেও তা করা সম্ভব নয়।
শাসক হিসেবে ইমরান খানের যে কয়েকটি কর্ম আমাকে আশান্বিত করেছে তার একটি হলো পাকিস্তানজুড়ে লঙ্গরখানার পুন:প্রতিষ্ঠা। লঙ্গরখানা, সরাইখানা, হাম্মামখানা - এই তিন, মুসলিম সভ্যতা সমূহের অন্যতম নিদর্শন। লঙ্গরখানা দু:স্থ-গরীবদের প্রয়োজনে। সরাইখানা মুসারফিরদের প্রয়োজনে। হাম্মামখানা নগরবাসীর প্রয়োজনে। লঙ্গরখানা অবহেলিতদের প্রতি ইসলামী রাষ্ট্র্যের সংবেদনশীলতা ও দায়িত্ববোধের প্রতীক। সরাইখানা সুদের বিপরীতে ব্যবসায় কার্য সম্প্রসারণে ইসলামী রাষ্ট্র্যের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার প্রতীক। হাম্মামখানা পরিচ্ছন্নতার ব্যপারে ইসলামী রাষ্ট্র্যের সহজাত প্রবণতার প্রতীক।
এর বিপরীতে যখন "আধুনিক" বাংলাদেশের দিকে তাকাই তখন এ অঞ্চল মুসলিম অধ্যুষিত এটা মেনে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কোটিরও অধিক নগরবাসীর জন্য খোদ ঢাকাতে যথোপোযুক্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। এই নগরের "অভিজাত" এলাকার জলাশয়গুলোর উৎকট দুর্গন্ধ পথচারীদের যেভাবে তাড়িয়ে বেড়ায়, তাতে স্পষ্ট হয় কোন্ শ্রেনীর লোকেরা এখানে "অভিজাত" হয়ে উঠেছে।
তবে এই চিত্র শুধু এদেশের নয়। বরঞ্চ সেই সব মুসলিম দেশগুলোর চিত্রও মোটামুটি এমন-ই, যেগুলো উপনিবেশবাদের স্বীকার। ঔপনিবেশিকেরা গত হয়েছে। কিন্তু গোলাম তৈরীর প্রতিষ্ঠান সমূহ রয়ে গেছে। গোলামীর স্বীকার সমাজ তার অভ্যাস বদলাতে সমর্থ হয় নাই।
যাবৎ বান্দীর পুতেরা নবাব হয়ে উঠছে, যাবৎ গোলামেরা দেশের মালিক বনে যাচ্ছে, তাবৎ এই অসহায় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় নাই।